শ্রীলঙ্কার সাথে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখনও তুলনীয় নয়। তবে এ থেকে অনেক কিছুই শিক্ষণীয় আছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, জাতীয় ইস্যুতে ঐক্য সবচেয়ে জরুরি। তা হলে বিদেশি ষড়যন্ত্র কখনোই সফল হবে না। চীনের সাথে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত চিন্তিত হলেও এর যৌক্তিকতা সরকার তাদের কাছে তুলে ধরতে সক্ষম বলে বিশ্বাস বিশ্লেষকদের।
করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্ববাজারে অস্থির অবস্থা তেল গ্যাসসহ জ্বালানির দামে। গমের উৎপাদন কমে যাওয়ায় ভাবাচ্ছে সবাইকে। এরমধ্যে অস্থিরতা বেড়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। পাকিস্তানে ইমরান খানের পতন, নতুন সরকার গঠনের পর এখনো বিপর্যস্ত তাদের অর্থনীতি। সবশেষ শ্রীলঙ্কায় মাহিন্দ্রা রাজাপাকসের পদত্যাগ, নতুন প্রধানমন্ত্রীর শপথ এবং অর্থনৈতিকভাবে ভেঙে পড়া কলম্বোতে জন বিক্ষোভ। ঋণে জর্জরিত দেশটি কবে, কিভাবে ঘুরে দাড়াবে তা এখনো বিরাট প্রশ্ন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ সংকটের পাশাপাশি চীন নির্ভরশীলতা আর যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সাথে দূরত্ব ত্বরান্বিত করেছে এ পরিস্থিতি।
সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি হতে চলেছে বাংলাদেশের এমন আশঙ্কা করা হচ্ছিল, যদিও সরকার সে আশঙ্কাকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তবে বৈদিশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে শুরু করে অর্থনীতির সব সূচক বলছে, শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতিতে সহসাই পড়বে না বাংলাদেশ। তারপরও এ ঘটনা প্রবাহ থেকে শিক্ষা নেয়ার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, আজ আমাদের তেমন পরিস্থিতি নেই দেখে ১০ বছর পর যে হবে না তা বলা যায় না। যাতে না হয় সেজন্য আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। এখানেই রাজনৈতিক ঐক্যমত প্রয়োজন। ইতোমধ্যেই শ্রীলঙ্কা থেকে শিক্ষা নেয়া শুরু হয়ে গেছে বলেও মনে করেন তিনি। অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ওবায়দুল হক বলেন, যেসব মৌলিক বিষয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়ন জড়িত, সেসব বিষয়ে আমাদের একমত থাকা দরকার। তাছাড়া মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য কাজ করতে হবে বলেও মত অধ্যাপকের।
প্রকল্প ব্যয় কমাতে নির্দেশনা বা সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বাতিলের মত উদ্যোগের প্রশংসা করে তারা। বাংলাদেশ-চীন অর্থনৈতিক ঘনিষ্ঠতা নিয়ে চিন্তিত যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। তবে এর প্রেক্ষাপট তাদের বোঝানো সম্ভব বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।