রাশিয়ার সাংবাদিক ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী দ্যমিত্রি মুরাতভ ইউক্রেনের শরণার্থীদের জন্য তার নোবেল পুরস্কারের মেডেলটি নিলাম করে দিচ্ছেন। তার নিজের দেশে স্বাধীন গণমাধ্যম নির্মূল হওয়ায় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মুরাতভ বলেন যে, রাশিয়াতে দিনদিন ক্রমান্বয়ে কম সংখ্যক মানুষ তাদের দেশের সামরিক অভিযানকে সমর্থন করছে।
নোভায়া গ্যাজেটা নামক পত্রিকার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও দীর্ঘদিনের প্রধান সম্পাদক হলেন মুরাতভ। পত্রিকাটি ক্রেমলিনের সমালোচনা করে থাকে। । সোভিয়েত ইউনিয়নের সাবেক প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভের নিজের নোবেল শান্তি পুরস্কারের অর্থ দিয়ে ১৯৯৩ সালে পত্রিকাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।
ভিন্নমত পোষণকারীদের বিরুদ্ধে ক্রমান্বয়ে কঠোর হতে থাকা বিধিনিষেধ অনেক বছর ধরেই উপেক্ষা করে আসছে পত্রিকাটি। তবে, মার্চে তারা অবশেষে তাদের অনলাইন ও ছাপা সংস্করণের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। সেই সময়ে ইউক্রেনে চলমান সংঘাত বিষয়ে সরকারের নীতির বাইরে কোন কিছু প্রকাশ করাকেই অপরাধ হিসেবে গণ্য করে রাশিয়ায় আইন পাস করা হয়। ঐ আইনে এমন কর্মকাণ্ডের জন্য ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়।
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুরাতভ বলেন, “আমার দেশ অন্য আরেক রাষ্ট্র, ইউক্রেনকে আক্রমণ করেছে । সেখানে এখন ১ কোটি ৫৫ লক্ষ শরণার্থী … আমরা অনেকদিন ধরে চিন্তা করেছি যে আমরা কি করতে পারি … এবং আমরা ভাবলাম যে সবারই নিজেদের প্রিয়, নিজেদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু একটা দিয়ে দেওয়া উচিৎ।”
তিনি বলেন, তার স্বর্ণের মেডেলটি নিলাম করার অর্থ হবে যে, তিনি কিছুটা হলেও শরণার্থীদের ভাগ্যে অংশীদার হচ্ছেন, যারা তাদের স্মৃতিচিহ্ন ও “তাদের অতীত” হারিয়েছেন।
পুরস্কার প্রদান কমিটির সহায়তায় ২০ জুন হেরিটেজ অকশন নামের প্রতিষ্ঠান মুরাতভের মেডেলটি নিলাম করবে। সেদিন বিশ্ব শরণার্থী দিবস।
মুরাতভ তার পুরস্কারটি নোভায়া গ্যাজেটার ছয় সংবাদকর্মীকে উৎসর্গ করেছেন। ঐ সংবাদকর্মীরা তাদের কাজের জন্য হত্যার শিকার হন। তাদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সবচেয়ে বেশি পরিচিত সমালোচকদের কয়েকজন রয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমের অভাব ও প্রতিবাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের তীব্র ভাবে চড়াও হওয়ার বিষয়েও দুঃখ প্রকাশ করেন মুরাতভ।
তথ্য সূত্রঃ ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।