পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব গিয়ে আরও দুই বাংলাদেশি হজযাত্রী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এদের মধ্যে গত ১৪ জুন মারা যান কক্সবাজারের বদরখালীর মো. রিদওয়ান (৬৪) ও ১৫ জুন মারা যান নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের আব্দুল গফুর (৬১)
এ পর্যন্ত সৌদি আরবে হজ পালন করতে গিয়ে ২১ বাংলাদেশি মারা গেছেন। তাদের মধ্যে তিনজন নারী। পবিত্র মক্কায় মারা যান ১৮ জন এবং মদিনায় তিনজন।
আজ শনিবার (১৭ জুন) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ম্যানেজমেন্ট পোর্টাল পিলগ্রিমের ডেথ নিউজে এসব তথ্য জানা গেছে। ডেথ সার্টিফিকেট সংযুক্ত ও তারিখ উল্লেখ করে পোর্টালে বলা হয়েছে, আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, উক্ত হাজি … তারিখে ইন্তেকাল করেন।
পিলগ্রিম সূত্রে জানা যায়, এর আগে ৩১ মে মারা যান মো. আব্দুল ওয়াহেদ (৪৬), গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে; ২ জুন শাহানারা বেগম (৬৪) ও ড. মো. শফিকুল ইসলাম (৫৮), তাদের বাড়ি যথাক্রমে ঢাকার বাটামারা ও পাবনার সদরে; ৩ জুন মো. আলী হোসেন (৬৭), তার বাড়ি শেরপুরের ঝিনাইগাতিতে; ৪ জুন মো. আয়ুব খান (৪৮), তার বাড়ি ঢাকার খিলগাও।
৬ জুন মো. শহিদুল আলম (৬৭), তার বাড়ি পঞ্চগড়ের রাধানগরে; ৭ জুন রোকেয়া বেগম (৬২), তার বাড়ি বগুড়ার সান্তাহারে; ৮ জুন মো. আদম উদ্দিন মণ্ডল (৭১) ও মো. আমজাদ হোসেন প্রধান (৫৭), তাদের বাড়ি যথাক্রমে নওগাঁর আত্রাই ও গাইবান্ধার বোনারপাড়া; ৯ জুন মারা যান মো. মতিউর রহমান (৬৮), তার বাড়ি রংপুরের সদরে; ১০ জুন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির আব্দুল মান্নান (৫৯)।
১৩ জুন সাতক্ষীরার বাঁশদহার মাখতুরা খাতুন (৬১); ১২ জুন কুমিল্লার বরুড়ার মোহাম্মদ আবুল হাশেম (৬১); ১১ জুন রংপুরের বদরগঞ্জের মো. শহিদুল্লাহ মন্ডল (৭৬); ৭ জুন কুমিল্লার দেবীদ্বারের মো. আবুল হোসেন ভূইয়া (৭১); ১০ জুন চাঁদপুরের হাজিগঞ্জের মো. আব্দুল মতিন (৬০); ১২ জুন মাগুরার মোহাম্মদপুরের সৈয়দ নাইমুল হক (৬২), ১৪ জুন মারা যান রাজশাহীর বুলুনপুরের মো. শাজাহান আলী (৬৬) ও কুমিল্লার বরুড়ার মো. আবুল কাশেম (৪৬)।
সৌদি আরেবের আইন অনুযায়ী, কোন ব্যক্তি হজ করতে গিয়ে যদি মৃত্যুবরণ করেন তাহলে তার মরদেহ সৌদি আরবে দাফন করা হয়। মৃতদেহ তার নিজ দেশে নিতে দেয়া হয় না। এমনকি পরিবার-পরিজনের কোনো আপত্তি গ্রাহ্য করা হয় না।
হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট গত ২১ মে শুরু হয়। সৌদি আরবে যাওয়ার শেষ ফ্লাইট ২২ জুন। অন্যদিকে হজ শেষে দেশে ফেরার ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ২ জুলাই। হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ২ আগস্ট।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, সর্বমোট ২৯ হাজার ১০৪টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী ভিসা পেয়েছে ১৬ শতাংশ, বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীরা পেয়েছে ৮৪ শতাংশ।
এবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৬০৩টি এজেন্সিকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলেও ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন সৌদিতে হজ পালনের অনুমতি পেয়েছেন। কিন্তু হজের খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ৯ দফা সময় বাড়িয়েও কোটা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। সর্বশেষ প্রায় ৫ হাজার কোটা সৌদি সরকারকে ফেরত দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।