ঢাকারবিবার , ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • অন্যান্য
  1. অর্থনীতি
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জীবনধারা
  6. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  7. বিনোদন ভুবন
  8. বিবিধ
  9. ভিডিও নিউজ
  10. রাজধানী
  11. রাজনীতি
  12. শিক্ষা
  13. সর্বশেষ
  14. সারাবাংলা
  15. স্বাস্থ্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গ্রেপ্তার ৭ ছাত্রদল নেতাকে নিয়ে প্রশ্ন কেন: ডি‌বি হারুন

নিজস্ব প্রতিবেদক
আগস্ট ২৮, ২০২৩ ৩:৫০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সম্প্রতি ছাত্রদলের সাত কেন্দ্রীয় নেতাকে অস্ত্র ও গুলিসহ ‌গ্রেপ্তারের পর নানান আলোচনা-সমালোচনা হয়। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানির জন্য তাদের অস্ত্র-গুলি দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয় বিএনপি ও ছাত্রদলের পক্ষ থেকে।

ছাত্রদলের নেতাদের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার‌কে ‘দুর্বল স্ক্রিপ্টের নাটক’ বলে অভিহিত করেছে সংগঠনটি। সংগঠনটি বলছে, ছাত্রদল কলমের রাজনীতি করে, অস্ত্রের রাজনীতি করে না।

এ বিষয়ে ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেন, অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার সাতজন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা বলে যদি কেউ বক্তব্য দেন হয়রানির উদ্দেশ্যে অভিযান, এটা ঠিক নয়। ডিবি সত্যিকার অর্থে অস্ত্রধারী ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালা‌চ্ছে। এটা চল‌বে। অস্ত্রধারী কোনো দলের হতে পারে না। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় বরং ছাত্রদলের ওই সাত কেন্দ্রীয় নেতাকে দলীয়ভাবে বহিষ্কার করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

সোমবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন হারুন অর রশীদ।

তি‌নি বলেন, আমাদের ডিবি পুলিশের আটটি টিমের প্রতিটিতে অস্ত্র উদ্ধারে আলাদা টিম রয়েছে। সম্প্রতি অস্ত্র উদ্ধারে একটা অভিযান পরিচালনা করে ছয়জনকে অস্ত্র গোলাবারুদসহ গ্রেপ্তার করে গুলশান গোয়েন্দা বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় কলাবাগান থানা এলাকা থেকে অস্ত্র-গুলিসহ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আবুল হাচান চৌধুরীকে ‌গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে চারটি অস্ত্র উদ্ধার ও ছাত্রদলের সাত কেন্দ্রীয় নেতাকে ‌গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

হারুন বলেন, তারা ফেসবুকে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, কথোপকথন করেছেন, কোন কোন অস্ত্র কোথায় তারা ব্যবহার করবেন, তার ছবি আমাদের কাছে রয়েছে। মাসুম নামে একজন ঢাবি ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসানকে বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হল দখলে ব্যবহার করবেন। কথোপকথনে উঠে এসেছে।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, কোনো দলের নেতা বা কর্মীকে ‌গ্রেপ্তার করা আমাদের উদ্দেশ্য না। তবে যারা চোরাকারবারি, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা করবে তাদের বিরুদ্ধেই আমাদের অভিযান। যদিও অনেকেই বলার চেষ্টা করছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এটা রাজনৈতিক কথাবার্তা। আমরা আমাদের আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছি।

তিনি দাবি করেন, ছাত্রদলের ‌গ্রেপ্তার নেতারা যে ১১টি অস্ত্র কেনার জন্য অস্ত্র ব্যবসায়ীদের কাছে অর্ডার করেছেন, সেটি প্রমাণিত।

ডিবি প্রধান বলেন, সম্প্রতি ‌গ্রেপ্তারকৃতরা হয়তো ছাত্রদলের নেতাকর্মী। কিন্তু এর আগেও তো শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকে আমরা অস্ত্রসহ ‌গ্রেপ্তার করেছি, বাড্ডা থানার অস্ত্র মামলায় আমরা নাসির, কাউসার, জীবনকে ‌গ্রেপ্তার করেছি, তারা সবাই ছাত্রলীগের নেতা। কিছুদিন আগে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার হারুন ও রশিদ হত্যা মামলার আসামি আসাদুজ্জামানকে দুটি অস্ত্রসহ আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তখন তো কেউ প্রশ্ন তোলেনি?

হারুন ব‌লেন, সম্প্রতি ‌গ্রেপ্তারকৃতরা ছাত্রদলের বলে কেন প্রশ্ন উঠছে? আমাদের উদ্দেশ্যটা রাজনৈতিক নয়। কে ছাত্রলীগ বা ছাত্রদলের সেটি আমাদের মুখ্য বিষয় নয়। মুখ্য বিষয় হচ্ছে, সে অস্ত্র ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, অস্ত্র ভাড়া করে মানুষের জীবনকে শেষ করার কাজ করছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিন্তে আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় আমরা করবো। তারা যদি কোনো দলের ছত্রছায়ায় এসব করে তাহলেও আমরা তাদের ছাড় দেবো না।

হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তার ছাত্রদলের সাত নেতাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছি তারা ১১টি অস্ত্র অর্ডার করেছেন। এর মধ্যে আমরা মাত্র চারটি উদ্ধার করতে পেরেছি। আরও সাতটি অস্ত্র এখনো উদ্ধার বাকি রয়েছে। সেগুলো উদ্ধার করে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। জিজ্ঞাসাবাদে আমরা অনেকের নাম পেয়েছি। তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

ছাত্রদলের ‌গ্রেপ্তার নেতারা কেন অস্ত্র কিনছেন, কোন কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্য ছিল তাদের- জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, ১১টি অস্ত্র তারা অনলাইনে বুকিং করেছেন, তার ছবি আমরা পেয়েছি। ১১টি অস্ত্রই কাদের কাছ থেকে তারা সংগ্রহ করেছেন, তাদের নামও আমরা জেনেছি।

বাকি অস্ত্রগুলোর বিষ‌য়ে তিনি বলেন, কোথায় এবং কী কাজে তারা ব্যবহার করবে, সেগুলো আমরা জেনেছি তবে তা আমরা এখনই বলছি না। আগে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। কক্সবাজার টেকনাফের নাম জেনেছি। এসব যাচাই করা হচ্ছে।

সামনে নির্বাচন সামনে রেখে সহিংসতার উদ্দেশ্যে অস্ত্র কেনা কি না জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, এটা তো পরিষ্কার। নির্বাচনের ডামাডোল বাজতে আর এক মাস বাকি। মানুষ ও রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। এ সময়ে ছাত্রদলের গ্রেপ্তার নেতারা ১১টি অস্ত্র সংগ্রহ করলেন বোমা-বারুদ সংগ্রহ করলেন, মোবাইল ফোনে কথোপকথনে তারা হল দখলের কথা বললেন। কে ব্যবহার করবে সেটাও বললেন, বণ্টন করলেন? এটা কিসের আলামত?

তিনি বলেন, আলামত যাই হোক না কেন, আমরা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে, অবৈধ অস্ত্রধারীরা যারাই হোক না কেন, তারা যে দলই করুক না কেন, আমাদের ডিবি পুলিশের প্রত্যেকটি টিম প্রত্যেককে আইনগত প্রক্রিয়ায় ‌গ্রেপ্তার করবে। তাদের রিমান্ডে এনে তাদের গডফাদারদের আমরা খুঁজে বের করবো ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। আমরা সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে চাই।

পুলিশকে দুর্বল মনে করে ঢাকা শহরে কোনো অস্ত্র ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক কারবারি ঢাকা শহরে ঘুরে বেড়াবে, আর ডিবির টিম বসে থাকবে, এটা হতে পারে না। আইনগত প্রক্রিয়ায় আমাদের যা যা করা দরকার আমরা তাই করবো। আর কেউ যদি অস্ত্র ব্যবসায়ীকে ধরার পর পুলিশকে হুমকি দেয়, তাদের মনে রাখা উচিত, কারও হুমকিতে ডিবি পুলিশ ভয় পায় না, বরং আমরা যাদের নাম পেয়েছি তাদের প্রত্যেককে গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অস্ত্রধারী কেউ দলের না।