ঢাকাসোমবার , ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • অন্যান্য
  1. অর্থনীতি
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জীবনধারা
  6. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  7. বিনোদন ভুবন
  8. বিবিধ
  9. ভিডিও নিউজ
  10. রাজধানী
  11. রাজনীতি
  12. শিক্ষা
  13. সর্বশেষ
  14. সারাবাংলা
  15. স্বাস্থ্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বাড়ছে মশাবাহিত রোগী মানা হচ্ছে না বৈজ্ঞানিক কোন পদ্ধতি

অনলাইনডেস্ক রিপোর্ট | ডেইলিনিউজ২৪বিডি.কম
আগস্ট ২০, ২০২৩ ১:১৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

দেশে প্রতি বছরই মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার বাড়ছে। এ বছরে এখন পর্যন্ত ৪৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে শুধু ডেঙ্গু জ্বরে। অথচ এই মশা দমনে প্রয়োগ করা হচ্ছে না বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। নেই পর্যাপ্ত গবেষণাও। বিশ্বব্যাপী আজ রোববার পালিত হবে বিশ্ব মশা দিবস।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে মশা দমনে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে সেটি হাস্যকর। এসব পদ্ধতি কার্যকরী কোনো সুফল বয়ে আনবে না। নির্দিষ্ট সময়ে মশা দমনে ওষুধ প্রয়োগ হচ্ছে না। যার কারণে মশা কমছে না।

কীটতত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, সিটি করপোরেশনের মশা নিধন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। তারা মশা মারতে যে কীটনাশক প্রয়োগ করছে, তার প্রয়োগ প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা নিয়ে আরও গবেষণা করতে হবে। তারা মশা নিধনে পানিতে হাঁস, ব্যাঙ ছাড়ছে। মশা নিধন করতে ফড়িং ছাড়ছে, এসব কার্যক্রম খুবই হাস্যকর, লোক দেখানো। এসব কার্যক্রমের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। মঞ্জুর আহমেদ বলেন, ‘প্রাকৃতিক কারণে ডেঙ্গু হচ্ছে, আবার প্রাকৃতিক কারণেই কমে যাচ্ছে। এদিকে মশা নিধনে সিটি করপোরেশনগুলো যেসব কর্মসূচি নিচ্ছে, সেগুলোর কোনো কার্যকারিতা নেই। সুতরাং এসব ফগিং করলেও যা, না করলেও তা। সিটি করপোরেশন যদি এই মুহূর্তে তাদের মশা নিধন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় তাতেও যা হবে, কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও তা-ই হবে। 

তিনি বলেন, মশা মারার জন্য যে সময়ে ফগিং দেওয়া হয়, সে সময়ে মশা তার নিজ জায়গায় থাকে না। বিভিন্ন দিকে ওড়াউড়ি করে। ঠিক সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্তে মশা কামড়ায়। এজন্য ফগিংটা হওয়া উচিত সেই সময়ে। বর্তমানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ প্রত্যেকেই প্রচারণা চালাচ্ছে যে, দূষিত পানিতেও এডিস মশা জন্মায়। এর কোনো বৈজ্ঞানিক রেফারেন্স তারা দেখাতে পারবে না। এডিস মশা কখনই দূষিত পানিতে জন্মায় না। এছাড়া বলা হচ্ছে, তিন দিনের জমা পানিতে এডিস মশা জন্মায়, কিন্তু বিষয়টি তা নয়। এডিস মশা জন্মাতে অন্তত সাত দিন সময় লাগে।

জানা যায়, ১৮৭৭ সালে যখন ব্রিটিশ ডাক্তার প্যাট্রিক ম্যানসন আবিষ্কার করেছিলেন যে একটি কিউলেক্স প্রজাতির মশা মানুষের ফাইলেরিয়াল রাউন্ডওয়ার্ম বহন করতে পারে। পরবর্তী দুই দশকে তিনি এবং ফ্রান্স, ইতালি, রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য গবেষকরা ম্যালেরিয়াতে গবেষণায় মনোনিবেশ করেন, যা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং নাতিশীতোষ্ণ দেশগুলোতে একটি প্রধান ঘাতক। তারা আস্তে আস্তে মানুষ এবং মশার মধ্যে ম্যালেরিয়া সংক্রমণ এবং জীববিজ্ঞানের জটিল সমীকরণ বুঝতে শুরু করেন। ১৮৯৪ সালে, ম্যানসন ম্যালেরিয়া প্যারাসাইটের সম্ভাব্য ভেক্টর হিসেবে ‘মশা বিষয়ক অধ্যয়ন’ করতে ভারতীয় মেডিক্যাল সার্ভিসের মেডিক্যাল অফিসার রোনাল্ড রসকে রাজি করান। বছরের পর বছর নিরলস গবেষণার পর রস শেষ পর্যন্ত ১৮৯৭ সালে প্রমাণ করেন যে অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়া পরজীবী বহন করতে পারে। তিনি তার আবিষ্কারের দিন, ২০ আগস্ট, ১৮৯৭-কে ‘মশা দিবস’ বলে অভিহিত করেছিলেন। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন পরে তার আবিষ্কারের তাৎপর্য চিহ্নিত করতে ২০ আগস্ট বিশ্ব মশা দিবসের নামকরণ করেন, যা প্রতি বছর পালিত হয়।

বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ১২৩ প্রজাতির মশা শনাক্ত করা হয়েছে, তার মধ্যে বর্তমান ঢাকাতে আমরা পাই ১৪ প্রজাতির। উষ্ণ আর্দ্র আবহাওয়া থাকার কারণে বাংলাদেশ মশা ও মশাবাহিত রোগ বিস্তারের জন্য উত্তম জায়গা। বাংলাদেশ মশাবাহিত রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো—ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া ও জাপানিজ এনসেফালাইটিস। ১৯৬৪ সালে প্রথম বাংলাদেশে ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত হলেও সেটিকে তখন ‘ঢাকা ফিভার’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল।  ২০০০ সালে প্রথম বাংলাদেশে ডেঙ্গু শনাক্ত হয় এবং সাড়ে ৫ হাজার মানুষ আক্রান্ত হন। এরপর  প্রতি বছরই কমবেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে মানুষ। ডেঙ্গু সংক্রমণ ঘটায় ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী এডিস মশার দুটি প্রজাতি। যার একটি হলো এডিস ইজিপ্টি, আরেকটি হলো অ্যালবোপিকটাস। এডিস ইজিপ্টিকে শহরে মশা বা নগরের মশা অথবা গৃহপালিত মশা বলা হয়। আর অ্যালবোপিকটাসকে বলা হয় এশিয়ান টাইগার মশা অথবা গ্রামের মশা। এডিস মশা পাত্রে জমা পানিতে জন্মায় ও বর্ষাকালে এর ঘনত্ব বেশি হয়। তাই ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব এ সময়টায় বেড়ে যায়।