একমাস বন্ধ থাকার পর আবারও চালু হলো অনলাইনে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের আবেদন প্রক্রিয়া। বৃহস্পতিবার এটি আবার চালু করা হয়। এখন থেকে ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন আবেদন ফরম জমা, সংশোধন ও সনদ দেবে ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়। এই কাজের দায়িত্ব আগে সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোর ওপর ন্যস্ত ছিল।
এর আগে আগস্টের শুরুতে অনলাইনে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের আবেদন সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। অনলাইনে ব্যক্তির নিজে আবেদন করা বন্ধ থাকার বিষয়ে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় ওয়েবসাইটে একটি নোটিশ জারি করে।
ওই নোটিশে বলা হয়েছিল, নিবন্ধনের সার্ভার মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সর্বসাধারণের প্রবেশ বন্ধ আছে। সার্ভার সুরক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত অনলাইনে ব্যক্তির নিজে আবেদন করা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। কেবলমাত্র সকল অথরাইজড ইউজার প্রবেশ করতে পারবে। জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের সকল সেবার ক্ষেত্রে সকল সেবাপ্রার্থীকে ও আবেদনকারীকে তার নিকটস্থ নিবন্ধক কার্যালয়ে যোগাযোগের মাধ্যমে নিবন্ধনের আবেদন দাখিলের জন্য অনুরোধ করা হলো। সাময়িক এ অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
এ বিষয়ে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়ের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. রাশেদুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, সার্ভার সুরক্ষিত করার কাজ করা হচ্ছে। সার্ভার সুরক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত অনলাইনে ব্যক্তির নিজে আবেদন করা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। সমস্যাটা সাময়িক। কবে নাগাদ তা চালু হতে পারে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা এখনো বলা যাচ্ছে না।
নিবন্ধক কার্যালয় এতসংখ্যক আবেদন নিজেরা পূরণ করতে গিয়ে চাপে পড়বে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুটা চাপ তৈরি হবে। আপাতত কিছু করার নেই। সার্ভার সুরক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সার্ভার কাজ করছে না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যেসব জায়গায় সমস্যার কথা শোনা যাচ্ছে, সেসব জায়গায় তা ঠিক করা হচ্ছে।
জানা যায়, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের সেবা নেয়া লাখ লাখ মানুষের তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে অনলাইনে নিজে আবেদন করার সুযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সার্ভার সুরক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত এই সুযোগ চালু করা হবে না।
গত ৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক অনলাইন সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশে একটি সরকারি সংস্থার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষের তথ্য ফাঁস হয়েছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তারা ওই সময় ওয়েবসাইটটির নাম প্রকাশ করেনি। পরে তারা আরেকটি প্রতিবেদনে জানায়, সংস্থাটি জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়।
তথ্য ফাঁসের ঘটনায় ১০ জুলাই ডিজিটাল নিরাপত্তা সংস্থার মহাপরিচালককে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, কারিগরি ত্রুটি ও দক্ষ লোকের অভাবে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয় থেকে তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। কারিগরি ত্রুটির কারণেই তথ্য উন্মুক্ত অবস্থায় ছিল। সংস্থাটি সংবেদনশীল তথ্য নিয়ে কাজ করলেও তাদের দক্ষ লোকবল ছিল না। একজন প্রোগ্রামার ও প্রয়োজনে আউটসোর্সিংয়ের ভিত্তিতে লোক এনে কাজ করানো হতো। এ ছাড়া যে প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে সফটওয়্যার বানানো হয়েছিল, তাদের কাছ থেকে সবকিছু ভালোভাবে বুঝেও নেয়া হয়নি।