ঢাকাসোমবার , ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • অন্যান্য
  1. অর্থনীতি
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জীবনধারা
  6. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  7. বিনোদন ভুবন
  8. বিবিধ
  9. ভিডিও নিউজ
  10. রাজধানী
  11. রাজনীতি
  12. শিক্ষা
  13. সর্বশেষ
  14. সারাবাংলা
  15. স্বাস্থ্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সারা দেশে সেনা মোতায়েন

Link Copied!

দেশব্যাপী সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত। স্পেন সফরও বাতিল করেছেন প্রধানমন্ত্রী ।

শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে শুক্রবার রাত ১২টা থেকেই সারা দেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এ বিষয়ে রাতেই জারি করা হয় প্রজ্ঞাপন। প্রথম ধাপে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। দুই ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় ধাপে বেলা ২টা থেকে কাল সকাল ১০টা পর্যন্ত কারফিউ থাকবে। জরুরি পরিষেবা ও গণমাধ্যম কারফিউর আওতামুক্ত থাকবে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আলাদাভাবে একই তথ্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন হবে। যেখানেই প্রয়োজন হবে, সেনাবাহিনী সেখানেই থাকবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে কিছু দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। হাসপাতালে আক্রমণ করেছে। বিভিন্ন থানা ও কারাগারে আক্রমণ চালিয়েছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বিটিভি সম্পূর্ণভাবে পুড়িয়ে দিয়েছে। মেট্রোরেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভারসহ জনগণের প্রয়োজনীয় সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করেছে। কোনো কোনো জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা করেছে। এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় ১৪ দলের নেতারা জনগণের নিরাপত্তা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং ১৪ দলের সভাপতির প্রতি অনুরোধ করেন। বৈঠকে বলা হয়, কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয় সরকার শুরু থেকেই আন্তরিক। তাই তাদের জন্য ২০১৮ সালে সরকার কোটা বাতিল করে দেয়। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালে সরকার আপিল করেছে। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার যেভাবে চেয়েছে, সরকার সেভাবেই উদ্যোগ নিয়েছে। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য শোনার জন্য তাদের সঙ্গে আলোচনাও শুরু করেছে। শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে জানিয়েছে কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করে কেউ রাজনৈতিক স্বার্থোদ্ধার করুক, এটাও তারা চান না।

ওবায়দুল কাদের এ সময় জানান, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী স্পেন সফরও বাতিল করেছেন। ২২ জুলাই সরকারি সফরে তার দেশটিতে যাওয়ার কথা ছিল।

বৈঠকে নেতারা বলেন, আন্দোলনের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার পরও জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডাররা তাণ্ডব চালাচ্ছে। রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তায় আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জনগণের জানমাল রক্ষায় সারা দেশে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের উদ্যোগ নিয়েছেন। শুক্রবার রাতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ১৪ দলের নেতারা আন্দোলনে নিহত সবার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। ১৪ দল নেতারা বর্তমান সংকট উত্তরণের জন্য দেশবাসীর কাছে সহযোগিতা কামনা করেন।

অন্যদিকে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সারা দেশেই সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যেখানেই প্রয়োজন হবে, সেনাবাহিনী সেখানেই থাকবে। আর শুক্রবার রাত ১২টা থেকে কারফিউ কার্যকর থাকবে। এ ঘোষণার পরপরই রাজপথ দ্রুত ফাঁকা হয়ে যায়।

এদিকে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর দেশজুড়ে পরিবহণ চলাচল বিঘ্ন ঘটে। রাজধানীসহ সারা দেশে পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীদের কমপ্লিট শাটডাউনের ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায়। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরিবহণেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে গুলির ঘটনায় সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এমন বিদ্যমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈঠক থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সুপারিশ করা হয়।

প্রসংগত, ১৪ দলীয় জোট নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলীয় জোট নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে ১৪ দল নেতারা পার্টি অফিস থেকে বের হন। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ধানমন্ডির কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগ ও শরিক দলের নেতারা গণভবনে যান। সেখানে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসেন তারা। ওবায়দুল কাদের ছাড়াও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. দিলীপ বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, গণআজাদী লীগের সভাপতি এসকে শিকদার, গণতন্ত্রী পার্টির ডা. শাহাদাত হোসেন, ডা. শহিদুল্লাহ শিকদার, গণতন্ত্রী পার্টির ডা. জহির, ডা. রশিদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, বিজিবির মহাপরিচালক এবং ডিএমপির কমিশনারও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।