কোটা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের ১ দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (৯ আগস্ট) তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে উপদেষ্টাদের দপ্তর বণ্টনের কথা জানানো হয়।
তবে এ সরকারের মেয়াদ আসলে কতদিন হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা ও নতুন নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষার মধ্যে সমন্বয় করে যতদিন থাকা দরকার ততদিনই ক্ষমতায় থাকবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। শনিবার (১০ আগস্ট) সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের ব্যাপারে এখনও কোনো কথা হয়নি। একটা জিনিস মাথায় রাখবেন কাইন্ডলি সেটা হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা থাকবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন, আবার এ দেশের সাধারণ মানুষের যে সংস্কার আকাঙ্ক্ষা, সেখানে প্রত্যাশা থাকবে এ সরকার যেন জরুরি কিছু সংস্কার করে যায়।
তিনি আরও বলেন, কারণ আমরা অতীতে দেখেছি নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কেও জনগণকে নির্যাতনের পথ হিসেবে চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু-কিছু ভালো সার্ভিস পেয়েছি। এসব প্রতিষ্ঠানে কিছু-কিছু ভালো মানুষ আছেন। কিন্তু পুরো সিস্টেমকে এমনভাবে দাঁড় করিয়েছিল, ভিন্নমত পোষণকারী মানুষ, মৌলিক অধিকার চর্চাকারী মানুষের জন্য এ প্রতিষ্ঠানগুলো একটা আতঙ্কে পরিণত হয়েছিল। এই সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা মানুষের আছে। সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা এবং নতুন নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষার মধ্যে সমন্বয় করে যতদিন থাকা দরকার ততদিনই আমরা থাকবো। বেশিও না, কমও না।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, ব্যক্তিগতভাবে যদি আমি বলি আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা জীবন মিস করি, আমি আমার উন্মুক্ত ফ্রি জীবন মিস করি। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ কবে আমি আমার সেই জীবনে ফিরে যেতে পারবো, যেটা আমার ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য অনেক বেশি এনজয়বল। ফলে আমার ব্যক্তিগত অভিমত এটা। কিন্তু দায়িত্বের জায়গা থেকে আমাকে এখানে এবং আমাদের অন্যান্য উপদেষ্টাকে যে দায়িত্বের জন্য আমরা এখানে এসেছি সে দায়িত্ব আমরা পালন করার চেষ্টা করব।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা তো আপনারা জানেন। এখানে যদি ওভারহোলিং না করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে যে সরকার আসবে তারা তো এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেভাবে ব্যবহার করবে। আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা সুখবর নয়।