ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ‘গণবিয়ে’র আয়োজন করা হচ্ছে বলে ছড়িয়ে পড়া খবর নিয়ে হই চই শুরু হয়েছে। তোলপাড় নেট দুনিয়া ।
তবে এই ধরনের আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন হলটির প্রাধ্যক্ষ।
২০ সেপ্টেম্বর ‘স্বাধীনতা ভোজ’ উপলক্ষে এই ‘গণবিয়ে’র কার্যক্রম শুরু হবে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দেন জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আল আমিন সরকার।
ইংরেজি বিভাগের এই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তিনি তাদের পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
আল আমিন বলেন, “২০ তারিখ আমাদের হলে ‘স্বাধীনতা ২.০’ উপলক্ষে একটি ভোজের আয়োজন করার কথা ছিল। আমি সেই ভোজের পর ‘গণবিয়ে’ আয়োজনের কথা ফেসবুকে পোস্ট করার পর ব্যাপক সাড়া পাই।”
“আমাদের শর্ত, এই বিয়েতে পাত্রী যে কোনো প্রতিষ্ঠানের হতে পারেন, তবে পাত্রকে অবশ্যই জহুরুল হক হলের ছাত্র হতে হবে। কিন্তু অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরাও আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন এই আয়োজনে বিয়ে করার জন্যে।”
শুধু উৎসব নয়, এটি একটি নীরব সামাজিক প্রতিবাদ দাবি করে আল আমিন বলেন, “আমাদের সমাজে একটি রীতি হল পাত্র ছাত্রাবস্থায় বিয়ে করতে পারেন না, যত দিন না পর্যন্ত তিনি চাকরি না পান। আমরা সেই রীতি ভেঙে শিক্ষার্থীদের বিয়ের আয়োজন করে নীরবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
আয়োজনের অর্থের উৎস কী- জানতে চাইল ঢাবির এই শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের হলের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা স্বাধীনতা ভোজকে কেন্দ্র করে টাকা দিচ্ছেন এবং আমরা আজ (বৃহস্পতিবার) ঠিক করব রানিং ব্যাচের শিক্ষার্থীরা কত টাকা দেবেন।”
বিশ্ববিদ্যালয় ও হল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আল আমিন বলেন, “প্রভোস্ট (প্রাধ্যক্ষ) স্যার আমাকে জানিয়েছেন, ভিসি স্যারের সাথে অনুমতি নেওয়ার ব্যাপারে আলাপ করে সিদ্ধান্ত জানাবেন।”
স্বাধীনতার ভোজের পাশাপাশি গণবিয়ে নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। এমন একজন ছাত্র হারুন মোহাম্মদ স্বাধীন।
আল আমিনের পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় স্বাধীন লিখেছেন, “মাশা-আল্লাহ, সুন্দর মানসিকতার মানুষের জন্য সুন্দর জীবনসঙ্গী হোক।”
আল আমিনের উদ্দেশ্যে সারওয়ার রিয়ন নামের আরেক শিক্ষার্থী লিখেছেন, “ভাই, আপনাকে অনেক ভালবাসি। এই উদ্যোগ কে নিয়েছে জানি না, তবে মুখপাত্র যেহেতু আপনি, অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।”
‘গণবিয়ে’কে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে পাত্র-পাত্রী সন্ধান নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে, কেউ করছেন সমালোচনা।
আল আমিন গণবিয়ের বিষয়ে প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলার দাবি করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে এমন আয়োজনের অনুমতি দিতে চান না তিনি।
জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফারুক শাহ বলেছেন, “বিশ্ববিদ্যালয় হল অ্যাকাডেমিক ইনস্টিটিউট, হল গণবিয়ের জায়গা না। আমরা এটার অনুমতি দিতে পারি না। আর এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা এখনও অনুমতি চাইতেও আসেনি। অনুমতি চাইলেও এমনটা সম্ভব না।”
অধ্যাপক ফারুক অবশ্য বলছেন, শিক্ষার্থীরা চাইলে তারা অন্য কোথাও এটা আয়োজন করতে পারে।