ঢাকাশুক্রবার , ৩রা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • অন্যান্য
  1. অর্থনীতি
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জীবনধারা
  6. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  7. বিনোদন ভুবন
  8. বিবিধ
  9. ভিডিও নিউজ
  10. রাজধানী
  11. রাজনীতি
  12. শিক্ষা
  13. সর্বশেষ
  14. সারাবাংলা
  15. স্বাস্থ্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মামলা বাণিজ্যের মাফিয়া বেনজির আহমেদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | ডেইলিনিউজ২৪বিডি.কম
জানুয়ারি ১, ২০২৫ ৬:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঢাকা, ১ জানুয়ারি, ২০২৫ : অন্যায়, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্য,বৈধকে করেছে অবৈধ এবং অবৈধ কে দিয়েছে বৈধতা। মিথ্যাকে বানানো হয়েছে সত্য এবং সত্যকে লুকানো হয়েছে কালো অপশক্তির আড়ালে। আড়ালের সেই সত্য সামনে আসতেই উঠে এসেছে মামলা বাণিজ্যের এক মাফিয়ার নাম। তিনি হলেন বেনজির আহমেদ।

মামলাবাজ বেনজির আহমেদ ছিলেন ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। সরকার পতনের পর তিনি পাল্টিয়েছেন তার খোলস। একের পর এক মামলায় জড়াচ্ছেন নিরীহ ব্যক্তিদের। জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী আইজিপি বেনজির আহমেদ এবং আজকের বেনজির আহমেদ তারা দুজনে ভিন্ন ব্যক্তি হলেও তাদের কর্মকাণ্ড অভিন্ন।

আসুন দেখে আসি কে এই বেনজির আহমেদ। খোঁজ করতে গিয়ে জানা যায়, তার বাবা মো. জয়নাল আবেদীন, মাতা. মমতাজ বেগম,গ্রাম: বৈচাতলী,ডাকঘর: গল্লাক বাজার,থানা: ফরিদগঞ্জ,জেলা: চাঁদপুর। এই বেনজির আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্য, ক্যাসিনো ব্যবসা , হত্যা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং জোরপূর্বক দখলদারির অভিযোগও রয়েছে ।

এই বেনজির আহমেদের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ২৭ মে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলা হয়। এই মামলায় দ্বিতীয় আসামি তিনি। এ ছাড়া ২০২৪ সালের ২০ জুলাই ২ কোটি ৬০ হাজার টাকা এবং একই বছরের ৯ অক্টোবর ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার মামলা হয়। এই মামলায় প্রধান আসামি বেনজির আহমেদ। এ সব মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ অক্টোবর বেনজিরকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের আদেশ নম্বর ১২২৫৪।

হাইকোর্ট গ্রেফতার করার আদেশ দিলেও বেনজির আহমেদ প্রকাশ্যে রয়েছেন। তিনি একের পর এক মামলায় প্রভাব বিস্তার করে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করছেন।

এই বেনজির আহমেদ কোথায় পেল এত ক্ষমতা, যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে হাতিয়ে নিয়েছে শত শত কোটি টাকা। ৪ আগস্টের একটি ফেসবুক পোস্ট, যেখানে রনি খান নামের একটি আইডি থেকে পোস্ট করা হয়। ঢাকা শহরের দুই প্রাণ সম্রাট মিজান সকাল ১১টার মধ্যে ঢাকা ক্লিয়ারের দায়িত্ব নিয়েছে। ফেসবুক পোস্টের এই ছবিতে দেখা যায় যুবলীগের সাবেক সভাপতি সম্রাট,সাবেক পালাতক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পিএস মিজানুর রহমান এবং এই বেনজির আহমেদকে।

সংগৃহীত ছবিতে যুবলীগের সাবেক সভাপতি সম্রাট, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পিএস এর সঙ্গে বেনজির আহমেদ

অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে যুবলীগের সাবেক সভাপতি সম্রাট,সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তার পিএস এর সঙ্গে বেনজির আহমেদের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি। রাজউক কর্মচারী শরিফ খান, ক্যাসিনো জুয়ারি দেবাশীষ এবং ক্যাসিনো পার্টনার মফিজুল ইসলামের সঙ্গেও রয়েছে তার ঘনিষ্ঠতা।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তার পিএস এর সহায়তায় বেনজির আহমেদ ঢাকা এবং তার আসেপাশের প্রায় প্রত্যেকটা এলাকায় গড়ে তোলে তার অপরাধের সাম্রাজ্য।
দুর্নীতি,ঘুষ চাঁদাবাজী,টেন্ডারবাজী,অবৈধভাবে জমি ক্রয়/বিক্রয়,দখলদারি গুপ্তহত্যা,মানুষকে হত্যার হুমকি, নির্দোষ মানুষের নামে মিথ্যে মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি এবং মোটা অংকের চাঁদা দাবি সবকিছুই ছিল তার হাতের মোয়া।

বেনজির আহমেদের মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার শিকার হয়েছেন অন্তত দেড় শতাধিক মানুষ। তাদের ১০ জনের নথি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। বাকিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। বেনজিরের মামলা বাণিজ্যের শিকার হলেন যাত্রাবাড়ীর দক্ষিণ কাজলার সোহাগ, যাত্রাবাড়ীর নয়া নগরের মো. সুমন, বাবু, যাত্রাবাড়ীর সুতিখালপুরের মো. রিয়াজ শেখ, কাজলার মো. রবি, রূপগঞ্জ নারায়ণগঞ্জের মতিয়ার রহমান, সোনারগাঁওয়ের হোসেন মোল্লা, লালবাগের মো. গিয়াসউদ্দীন, সাভারের মো. দিপু, শুক্রবাদের মো. তৌফিক আহমেদ।

মামলার বাদীরা জানিয়েছেন তারা ওই আসামিদের নাম মামলায় উল্লেখ করেননি। বাদীর মধ্যে রয়েছেন কুমিল্লার হাবেজা আক্তার, যিনি ১৪ নভেম্বর যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন। মামলা নং ৩৫। কুমিল্লার মো. হুমায়ুন কবির, তিনি ধানমন্ডি থানায় ২৭ নভেম্বর মামলা করেন মামলা নম্বর ১৬। এ ছাড়া বরগুনার বশির, সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৯ নভেম্বর মামলা করেন। মামলা নম্বর ১০। এ সব মামলায় এজাহারের বাইরে আসামি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

অথচ এত অপরাধ করেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন দুর্নীতির রাখব বোয়াল এই জুয়ারি বেনজির আহমেদ। তাকে ধরতে হাইকোর্ট আদেশ দিলেও আসামিকে ধরা যাচ্ছে না।
প্রশাসন তাকে ধরতে পারছে না নাকি ধরার চেষ্টা করছে না সেটিও এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে এই প্রতিবেদক যোগাযোগ করেন বেনজির আহমেদের সঙ্গে। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর তিনি বলেন, আমি এ সব বিষয়ে কথা বলব না।