সুশাসন ও জবাবদিহিতার অভাবে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুর্নীতি দেশদ্রোহিতার সমতুল্য
ঢাকা, ৪ মে ২০২৫: সুশাসন ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট শারমীন এস মুরশিদ আজ এক গোলটেবিল আলোচনায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের দুর্নীতিকে “দেশদ্রোহিতার শামিল” বলে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানান। তিনি বলেন, “যেসব কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারক জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করেন, তারা মূলত জাতীয় নিরাপত্তকেই বিপন্ন করেন।”
মূল বক্তব্য:
- দুর্নীতির জাতীয় প্রভাব:
শারমীন মুরশিদ強調 করেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি কেবল অর্থনৈতিক ক্ষতি করে না, এটি সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। “বিদেশি ঋণ ও সহায়তার অর্থ যদি লোপাট হয়, তাহলে আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সম্মান হারাই,” তিনি যোগ করেন। - দেশদ্রোহিতার আইনি সংজ্ঞা:
তিনি উল্লেখ করেন, সংবিধানের ৭(৩) ধারা অনুযায়ী “রাষ্ট্রের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা” দেশদ্রোহিতা। “যখন কেউ সরকারি পদে থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন করেন, তখন তা সরাসরি এই সংজ্ঞার আওতায় পড়ে,” বলেন তিনি। - জবাবদিহিতার সংকট:
শারমীন প্রশ্ন তোলেন, “একজন সাধারণ নাগরিক যদি ট্যাক্ট ফাঁকি দেয়, তাকে শাস্তি পেতে হয়। কিন্তু যারা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন, তারা কীভাবে আইনের ঊর্ধ্বে থেকে যান?”
সমাধানের পথ:
তিনি তিনটি জরুরি পদক্ষেপ প্রস্তাব করেন:
১. সকল সরকারি খাতের জন্য স্বাধীন অডিট ব্যবস্থা চালু করা
২. দুর্নীতির মামলাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তি
৩. রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে নাগরিক পর্যবেক্ষণ (Public Oversight) বাধ্যতামূলক করা
প্রেক্ষাপট:
গত সপ্তাহে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে দুর্নীতিতে বাংলাদেশের স্কোর ১০০-তে মাত্র ২৬ (স্কেল: ০-১০০, যেখানে ০ সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত)। এ অবস্থায় শারমীন মুরশিদের এই বক্তব্য সরকারি মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
শেষ কথা:
তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “দুর্নীতিকে যদি এখনই নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না। এটি কোনো রাজনৈতিক ইস্যু নয়—এটি বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্ন।”