বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে এক বৈঠকে গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর পরিবার ও আওয়ামী লীগকে নিয়ে গুজব সৃষ্টির পরিকল্পনা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এবং তা বাস্তবায়নের জন্য তারেক মোটা অর্থ দিয়েছেন বলে দাবি ভারতীয় সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুখরঞ্জন দাসগুপ্তের।
সদ্য শেষ হওয়া জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশের রাষ্ট্রনায়কদের সঙ্গে একই মঞ্চে বসে মাথা উঁচু করে কথা বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মূল অধিবেশনে ভাষণও দিয়েছে দুই দফায়। এছাড়া শীর্ষ সম্মেলন শুরুর আগে মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেছেন তিনি।
গোটা দিল্লিজুড়ে ২৮ দেশের জাতীয় পতাকার সঙ্গে ছেয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকাও। ভারতসহ বিশ্বের প্রায় সব গণমাধ্যমে বাংলাদেশ ছিল প্রধান শিরোনামে। একে দেশটির বড় অর্জন হিসেবে দেখছে বিশ্বগণমাধ্যম থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তবে এটাই চক্ষুশূল হয়েছে বিরোধীদের। বাংলাদেশ সরকারের এ অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে গুজবের বাক্স খুলতে চলছে পরিকল্পনা। আর গুজবের ভিত্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে প্রতিবেশী ভারতের কিছু দেওয়াল পত্রিকা কিংবা ওয়েব পোর্টাল, এমন কি ফেসবুক পেজকে।
এ বিষয়ে ভারতীয় সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাসগুপ্ত বলেন, ‘এই শক্তি (বিরোধীদল) এখন নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এ শক্তির নেপথ্যে কে কী লিখছে, তাকে এত গুরুত্ব দেয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশ গুরুত্ব দেয়া মানেই যে লিখেছে তাকে গুরুত্ব দেয়া, যে ষড়যন্ত্র করছে তাকে গুরুত্ব দেয়া।’
তিনি মনে করেন, আল কায়দার মতো সংগঠনের সঙ্গে যাদের সংযোগ, তারা গুজবের মতো হাতিয়ার বেছে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের কালিমা দেয়ার চেষ্টা করবে – এতে অস্বাভাবিক কিছু নেই।
সুখরঞ্জন আরও বলেন, ‘তারেক রহমান বেশ কিছুদিন আগে সিঙ্গাপুরে কিছু বিদেশি কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠক করে বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে পাকিস্তান আছে। আমরা পাকিস্তানের পুরো সমর্থন পাবো; আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন।’’
তিনি আরও বলেন, ‘একাত্তরে পাকিস্তান ৩০ লাখ বাঙালিকে হত্যা করেছিল। তারপর বাঙালিদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। তারা এখন তারেক রহমান ও জামায়াতকে সমর্থন করবে এবং বাংলাদেশিদের হত্যা করার অপচেষ্টা চালাবে, এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু তারেক রহমান এখন নিয়মিতই কথা বলে বৈঠক করছেন।’
বর্ষীয়ান এ সাংবাদিকের মতে, প্রত্যেক গুজবের একটা মাত্রা থাকে। যখন সেই মাত্রা অতিক্রম করবে, তখনই গুজব হিসেবে উল্টো যারা রটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে বুমেরাং হিসেবে কাজ করবে। যে জাতি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, সেই জাতি গুজবকে কোনো রকম গুরুত্ব দেবে না।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুখরঞ্জন দাসগুপ্ত প্রায় ৫ দশক ভারতের শীর্ষস্থানীয় একটি বাংলা দৈনিকে কাজ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ থেকে স্বাধীন বাংলাদেশ কিংবা সেনাশাসক থেকে বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি, এমন কী উন্নয়নের বাংলাদেশ – সবটাই নানা সময় তার লেখায় উঠে এসেছে।