গোটা ভারতজুড়ে দ্বিতীয় পর্বের করোনা সংক্রমণে আতঙ্ক চলছিলো। করোনার দ্বিতীয় ওয়েভে ভারতে সৃষ্টি করোনার ডবল মিউট্যান্টের জন্যই রোজ লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। করোনাভাইরাসের ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই এ বার ভারতে থাবা বসাল ‘ট্রিপল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়্যান্ট’।
কিন্তু এবার উঠে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আক্রান্তদের শরীরে মিলল মারণ করোনার ট্রিপল মিউট্যান্ট। যা জেনে শিহরিত হচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আরও সহজ ভাবে বুঝতে গেলে বলতে হয়, এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো অভিযোজিত হয়ে নতুন করে ভোল বদল করলো করোনা।
ক্ষমতা প্রায় তিন গুণ, তিনটি আলাদা রূপ মিলে তৈরি ভাইরাসের নয়া প্রজাতির এই ট্রিপল মিউট্যান্ট বা করোনার তৃতীয় রূপান্তর ।
মনে করা হচ্ছে ইতিমধ্যেই ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে তা ছ়ড়িয়ে পড়েছে। যার মধ্যে অন্যতম পশ্চিমবঙ্গ। মহারাষ্ট্র এবং দিল্লিতেও এই ট্রিপল মিউট্যান্টের সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, কোভিড-১৯ ভাইরাসের তিনটি আলাদা স্ট্রেন মিলে তৈরি ভাইরাসের এই নয়া ভ্যারিয়্যান্টের সংক্রামক ক্ষমতাও প্রায় তিন গুণ।
সংক্রমণ বাড়াচ্ছে করোনার তৃতীয় রূপান্তর, কার্যকরী কি ভারতীয় ভ্যাকসিন?
এতদিন পর্যন্ত ডবল মিউটেশন উদ্বেগ বাড়ছিল চিকিৎসক-বিজ্ঞানীদের মধ্যে। এ বারে তৃতীয় মিউটেশনের সন্ধান মেলায় আতঙ্ক, ভয় যে এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে তা বলাই বাহুল্য। এমতাবস্থায় এখন ভারতের চিকিৎসকদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ এই নতুন ধরণের করোনা ভাইরাসকে মোকাবিলা করা। বিশেষজ্ঞদের ধারণা ট্রিপল মিউট্যান্টের সংক্রমণের ফলে আবারও বদলাতে শুরু করতে পারে করোনার উপসর্গ। সেই ক্ষেত্রে রোগী শনাক্ত ও চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়েও বাড়ছে উদ্বেগ।
অন্যদিকে এই ট্রিপল মিউট্যান্ট ভাইরাসকে আটকাতে বাজারে থাকা ভ্যাকসিনগুলি কতটা সক্ষম সেই বিষয়েও বিশেষ ভাবে কিছু জানা যাচ্ছে না। অর্থাৎ, যে উপসর্গ এখনকার ভেরিয়েন্টের সংক্রমণের ফলে হচ্ছে, তা আর নাও থাকতে পারে। আবার এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে একাধিক নয়া উপসর্গ। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, একটি ভাইরাস যতবেশি মানুষকে সংক্রামিত করবে, তার মিউটেশন তত বাড়বে। এক্ষেত্রেও করোনা সেই রাস্তাতে হেঁটেই তার সংক্রমণের গতি বাড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং বাংলায় , যেভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তার পিছনে নয়া এই “ট্রিপল মিউট্যান্ট”। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা পশ্চিম বঙ্গ রাজ্যে করোনার কবলে পড়ছেন ২ লক্ষ ৯৫ হাজারের বেশি মানুষ। যা এখনও পর্যন্ত সর্বকালীন রেকর্ড। তাই সংক্রমণের গতি কমাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকরী উপায় ।