সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য নভেম্বরের শুরুতে বিদেশে যাওয়ার কথা ছিল। সে সময় সবকিছু প্রস্তুত করা হলেও তার শারীরিক অবস্থার কথা চিন্তা করে তাকে দেশের বাইরে নেয়া যায়নি। তবে আবারও তাকে বিদেশে নেয়ার প্রস্তুতি চলছে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সও ঠিক করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আসছে ডিসেম্বরের শুরুতে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে রওনা হবেন খালেদা জিয়া ও তার সফরসঙ্গীরা।
জানা গেছে, ডিসেম্বরের একদম শুরুতেই লন্ডন যাবেন খালেদা জিয়া। প্রায় ৮ বছর পর লন্ডনে তার বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা হবে বিএনপি চেয়ারপারসনের। সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্সে যেতে পারেন তিনি। সুস্থ হয়ে দেশে ফেরার পথে পবিত্র ওমরাহ পালনে সৌদি আরবেও যাওয়ার কথা রয়েছে খালেদা জিয়ার। বিষয়টি নির্ভর করবে তার শারীরিক অবস্থার ওপর- এমনটাই জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
তার বিদেশ যাত্রার বিষয়টি সার্বক্ষণিকভাবে দেখভাল করছেন তার পরিবার ও চিকিৎসক এবং বিএনপির শীর্ষ কয়েকজন নেতা। বর্তমানে মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে বাসায় থেকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিচ্ছেন বিএনপি প্রধান। এরই মধ্যে একটি বিশেষাষিত এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ অন্তত ১৬ জনের মতো ব্যক্তি সফরসঙ্গী হবেন বলে জানা গেছে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসক দলের অন্যতম সদস্য ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে একটু স্থিতিশীল বলেও জানান তিনি।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দির পর খালেদা জিয়ার শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দেয়। পরে বিশেষ বিবেচনায় তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দফায় দফায় খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য চিঠি ও আহ্বান জানালেও তা মানেনি তৎকালীন সরকার। পরিবার থেকে সরকারের কাছে কয়েক দফা আবেদন করা হলেও অনুমতি মেলেনি। বরং খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে ফাইল ছোড়াছুড়ির মাধ্যমে কালক্ষেপণ করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এখন গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বিদেশে যাওয়ার বাধা দূর হয়েছে খালেদা জিয়ার।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, কিডনি জটিলতা, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। এ ছাড়া গত ২৫ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়। কয়েক দফায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন খালেদা জিয়া।