ঢাকাবুধবার , ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • অন্যান্য
  1. অর্থনীতি
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জীবনধারা
  6. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  7. বিনোদন ভুবন
  8. বিবিধ
  9. ভিডিও নিউজ
  10. রাজধানী
  11. রাজনীতি
  12. শিক্ষা
  13. সর্বশেষ
  14. সারাবাংলা
  15. স্বাস্থ্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনে কতটা প্রস্তুত ইসি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | ডেইলিনিউজ২৪বিডি.কম
ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫ ৭:০৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঢাকা, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে চলছে নানা জটিলতা ও আলোচনা। বিএনপি এবং তাদের সমমনা দলগুলোর দ্রুত নির্বাচনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ডিসেম্বরের মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, সীমানা পুনর্নির্ধারণ এবং আইনি সংস্কারের মতো জরুরি কাজগুলো সম্পন্ন করতে চাপের মুখে রয়েছে। যদিও ইসি দাবি করছে, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে তারা নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুত, তবুও বেশ কিছু প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি বাধা এখনও অমীমাংসিত।

ভোটার তালিকা হালনাগাদে অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ

নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসি গত জানুয়ারি থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। চলতি মাসে বায়োমেট্রিক ডেটা (আঙুলের ছাপ ও আইরিশ স্ক্যান) সংগ্রহ এবং ছবি তোলার কাজ চলছে দেশজুড়ে। তবে, ২০২৬ সালের ২ জানুয়ারির আগে যারা ভোটার হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন, এমন প্রায় ১৮.৫ লাখ তরুণকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে আইনি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে। এছাড়া, মৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে মৃত্যু সনদ না থাকায় স্থানীয় পর্যায়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। টাঙ্গাইলের এক কর্মকর্তার মতে, অনেক পরিবার মৃত সদস্যের তথ্য দিলেও আনুষ্ঠানিক ডকুমেন্টেশনের অভাবে এই প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে জটিলতা

গত নির্বাচন কমিশন ১০টি আসনের সীমানা পরিবর্তন করলেও এবার ইতিমধ্যেই ৪১টি আসনে সীমানা পুনর্নির্ধারণের আবেদন জমা পড়েছে। জনসংখ্যা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে আসন সীমানা ঠিক করতে গিয়ে অতীতের কিছু অসামঞ্জস্যতা এখনও রয়ে গেছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা এখনও চূড়ান্ত না হওয়ায় ইসি এই কাজে অগ্রগতি দেখাতে পারছে না। তবে, জনসংখ্যা ও ভোটার ডেটা বিশ্লেষণ করে প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসির সংশ্লিষ্ট শাখা।

রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও আইনি সংস্কারের অনিশ্চয়তা

বর্তমানে ৪৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল থাকলেও নতুন দল নিবন্ধনের প্রক্রিয়া আটকে আছে সংস্কার প্রস্তাবের অপেক্ষায়। গত নির্বাচনে দুটি নতুন দল নিবন্ধন পেলেও এবারও বেশ কিছু দলের আবেদন প্রক্রিয়াধীন। ইসি সূত্রে জানা গেছে, কিছু দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। এদিকে, নির্বাচনী আইন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংস্কারসহ ১৫০টির বেশি প্রস্তাব এখনও আলোচনার টেবিলে রয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এই সংস্কার নিয়ে ছয় মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার লক্ষ্য রাখলেও সময়সীমা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইসি কর্মকর্তারা।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সম্ভাবনা

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার ভোট আয়োজনের দাবি উঠেছে কিছু রাজনৈতিক মহল থেকে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও এই ইঙ্গিত দিলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সরকারের সিদ্ধান্ত ও প্রস্তুতির ওপরই এই বিষয়টি নির্ভর করবে। তবে, একই সময়ে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া ইসির জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করতে পারে।

সময়সীমা ও নির্বাচনি তফসিল

ইসি কর্মকর্তাদের মতে, ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত, দল নিবন্ধন এবং আইনি কাঠামো পুনর্গঠন করা জরুরি। তবে, সংস্কার প্রস্তাব অনিশ্চিত থাকায় তফসিল ঘোষণা পিছিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সাধারণত নির্বাচনের ৪৫-৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করা হয়, যা ডিসেম্বরের ভোটের ক্ষেত্রে অক্টোবরের মধ্যে জরুরি।

শেষ কথাঃ প্রস্তুতি ও অনিশ্চয়তার দ্বন্দ্ব

নির্বাচন কমিশন তাদের সাধ্য অনুযায়ী প্রস্তুতি চলমান রাখলেও আইনি সংস্কার, রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতার কারণে ডিসেম্বরের নির্বাচন এখনও অনিশ্চিত। ভোটার তালিকা হালনাগাদ থেকে শুরু করে দলীয় নিবন্ধন—প্রতিটি ধাপেই সময়ের সাথে প্রতিযোগিতা চলছে। সরকার, ইসি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বিত উদ্যোগই কেবল এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের।