ঢাকা: আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে দেশের প্রধান দুটি শহর ঢাকা ও চট্টগ্রামের সব ক্যাবল টিভি গ্রাহককে বাধ্যতামূলকভাবে সেট টপ বক্স বসাতে হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ক্যাবল টিভি অপারেটর, টেলিভিশন মালিক, ডিটিএইচ সেবাদানকারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটি টাইম ফ্রেম নির্ধারনের জন্য আলোচনায় বসেছি। যে আলোচনাটা হয়েছে সেটি হচ্ছে- আমরা গ্রাহককে দু’মাস সময় দিয়ে, অর্থাৎ আজ হলো পহেলা ফেব্রুয়ারি, ঢাকা এবং চট্টগ্রামে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে সব গ্রাহককে ডিজিটাল সেট টপ বক্স লাগানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। আগামী ১ এপ্রিল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে যাতে আমরা সেট টপ বক্স সবাইকে দিতে পারি সে লক্ষ্য ঠিক করে সবাই কাজ করবে। ’
তিনি বলেন, ‘আগামী ১ এপ্রিল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের যেসব গ্রাহক সেট টপ বক্স নেবেন না, বা বসাবেন না তারা অনেকগুলো চ্যানেল দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন। ’
ঢাকা চট্টগ্রামের পর বিভাগীয় শহরগুলোতেও একই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আরও দু’মাস সময় দিয়ে আগামী ৩০ মের মধ্যে সব বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে একই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। একই বিষয় কার্যকর হবে আগামী ১ জুন থেকে সব বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে। ’
দেশে সেট টপ বক্স মজুদের তথ্য তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশে কয়েক লাখ সেট টপ বক্স এরই মধ্যে আনা হয়েছে, যেগুলো মজুদ আছে। ’
দেশেই সেট টপ বক্স তৈরির পরিকল্পনা কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির সঙ্গে কথা বলেছি, তারা যাতে এখানেই সেট টপ বক্স তৈরি করতে পারে সে উদ্যোগ নিচ্ছে। ’
সেট টপ বক্স গ্রাহকদের নিজেদের পয়সা দিয়ে কিনতে হবে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটা সারা পৃথিবীতে গ্রাহককেই অর্থ দিয়ে নিতে হয়। আমরা আগেও এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি, সুলভ মূল্যে যাতে দেওয়া হয়। কিস্তিতে যাতে কেনা যায়। এ বিষয়ে একটা নীতিমালা তৈরি করা হবে। পুরো কেবল অপারেটিং সিস্টেমের জন্য একটি নীতিমালা তৈরির বিষয়টি আজকের আলোচনায় এসেছে। আমরা মনে করি যে একটি নীতিমালা করা প্রয়োজন। আইনের আলোকে একটি নীতিমালা ও পরামর্শক কমিটি করার কথা বলা আছে। আমরা এ বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছি। এটি করা হবে। ’
সেট টপ বক্সের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রচার মাধ্যম ডিজিটাল করতে আমরা যে উদ্যোগ নিয়েছি সেটাকে বাস্তবায়ন করতে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনারা জানেন এ ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছিল হাইকোর্টে। আমাদের উদ্যোগের ওপর একটি স্থগিতাদেশ এসেছিল। আমরা মন্ত্রণালয় থেকে ফেস করে সেই আদেশ স্থগিত করা হয়েছে। অর্থাৎ এখন ডিজিটাইজড করার ক্ষেত্রে আইনগত কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। ’
মন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাইজড করতে না পারার কারণে এই মাধ্যমের সঙ্গে যারা যুক্ত তারা যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন, একই সঙ্গে দেশও বঞ্চিত হচ্ছে। সরকার যে ভ্যাট-ট্যাক্স এ খাত থেকে পায়, সেটি সঠিক ভাবে আদায় হয় না। এটি বছরে প্রায় দেড় থেকে হাজার কোটি টাকার কম নয়। ’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা গ্রহককে আরও ভালো সেবা দেওয়ার জন্য, এই সেবার দেওয়ার পেছনে যারা আছে তারাও যাতে তাদের ন্যায্য হিস্যাটা পায় এবং রাষ্ট্র যাতে বঞ্চিত না হয় এ জন্যই এটিকে আমরা ডিজিটাইজড করতে চাই। ’