ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহী গ্রেপ্তার। শনিবার দুপুরে ওমরাহ হজ পালন শেষে দেশে ফিরলে বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। গাজীপুরের ডিবি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রোকন মিয়া বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মাহী দম্পতির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া মারধর, ভাঙচুর, চাঁদা দাবি ও জমি দখলের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে হুকুমের আসামি করে আরও একটি মামলা করেন স্থানীয় ইসমাইল হোসেন। এ মামলায় ২৮জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, গাজীপুর মহানগর পুলিশ উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আবু তোরাব মোহাম্মদ শামসুদ্দিন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহী স্বামী রকিব সরকারের সাথে সম্প্রতি সৌদি আরব গিয়েছেন ওমরা হজ্ব পালন করতে। সেখান থেকে শুক্রবার সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে স্বামী রকিব সরকারের গাড়ির শোরুমে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেন। ফেসবুক লাইভে তিনি দাবি করেন, তার স্বামীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সনিরাজ কার প্যালেস নামের গাড়ির শোরুমের গেট ভেঙে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ইসমাইল হোসেন ও মামুন সরকারের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন মাহিয়া মাহি। এসময় ফেইসবুক লাগবে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ তুলেন মাহী।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহি পুলিশের বিরুদ্ধে ঢালাও অভিযোগ করেছেন, মিথ্যা বলে মানুষের সহানুভূতি নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। অথচ মাহী বা তার স্বামী জমিজমা সংক্রান্ত কোনো বিষয় নিয়ে আমার কাছে আসেননি। যাদের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন, তাদেরও আমি চিনি না। ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার ভোরে বিষয়টি জানার সাথে সাথেই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দু’পক্ষই পালিয়ে যায়। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে। ইসমাইল হোসেনসহ তার পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়ে এবং তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে আহত ইসমাইল বাদী হয়ে ২৮ জনের বিরুদ্ধে বাসন থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
মাহীর ফেসবুক লাইভের পর সংবাদ সম্মেলন করেন স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে পাল্টা অভিযোগ তুলে বলেন, রাকিব সরকার তার প্রায় সোয়া ১১ শতাংশ জমি দখল করে গাড়ির শো-রুম করেছেন। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তিনি এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন, বিষয়টি মীমাংসার জন্য দফায় দফায় চেষ্টাও করা হয়। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে নতুন কিছু গাড়ি রাকিব সরকারের লোকজন ওই শো-রুমে উঠাতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, এমন খবর পেয়ে আমিসহ কয়েকজন সেখানে হাজির হই। এ সময় রাকিব সরকারের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা নিজেরাই নিজেদের শো-রুম ভাঙচুর করেছে। ওই জমি রকিব সরকারের নয়। জমি ছেড়ে দেয়ার শর্তে রাকিব সরকার আমার কাছে এক কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। যেখানে এক কোটি টাকা দিলে সমস্যা সমাধান হয়, সেখানে কেন আমি পুলিশকে দেড় কোটি টাকা দেব? পুলিশ আমার পক্ষে থাকলে আজ কেন আমি মার খেলাম? মেট্টোপলিটন পুলিশকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই রকিব সরকার তার স্ত্রী চিত্রনায়িকা মাহিকে ব্যবহার করছেন।