ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, বিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। এ দেশে সম্প্রীতির যে মেলবন্ধন সৃষ্টি হয়েছে, তা বিশ্বের বুকে এক অন্যন্য নজির স্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে শান্তিতে বসবাস করে। প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব আয়োজনে সহায়তা ও নিরাপত্তা দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সে নির্দেশনা মতো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।
‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতির কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘আমরা এ উৎসবে মিলিত হতে এখানে এসেছি। এ দেশে সম্প্রীতির যে মেলবন্ধন সৃষ্ট হয়েছে, তা বিশ্বের বুকে এক নজির স্থাপন করেছে।’
বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যেকোন প্রয়োজনে আমরা আপনাদের পাশে আছি। আপনাদেরকে যেকোনো সহযোগিতা করতে আমরা সবসময় প্রস্তুত আছি।’
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে আইজিপি আজ রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আইজিপি বৌদ্ধ বিহারে এসে পৌঁছালে বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় তিনি একটি কেক কেটে সকলের সাথে বুদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছেন এ কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘এ নীতির আলোকে আমরা দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে একসাথে দায়িত্ব পালন করে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্সে বাংলাদেশ পূর্বে যে অবস্থানে ছিল, তার চেয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা অনেক ভালো। আমরা সবাই মিলে কাজ করার ফলেই এ সফলতা এসেছে।’
যে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটার সাথে সাথে দ্রুততম সময়ে পুলিশকে জানানোর জন্য সকলের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা নিকটস্থ পুলিশ ইউনিট অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করুন, আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যখনই কোনও ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড ঘটছে, সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনায় আমাদের সাফল্য রয়েছে। অপরাধী যেই হোক, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।’
এরআগে শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে মেরুল বাড্ডায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন ও সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা ঘুরে দেখেন আইজিপি। এ সময় সঙ্গে ছিলেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বুদ্ধদেব আজ থেকে প্রায় ২ হাজার ৬শ’ বছর আগে এই ধরাধামে এসেছিলেন, এ পৃথিবী থেকে দুঃখ-কষ্ট-জরা-ব্যথা, আমাদের মাঝে বিভেদ এবং আন্তঃধর্মীয় বিভেদ দূর করার জন্য, সমস্ত বর্ণের লোককে একত্র করতে মহাবাণী নিয়ে তিনি এসেছিলেন। আমি মনে করি বর্তমান পৃথিবীতে যে হানাহানি, রক্তক্ষয় ও হিংসা-বিদ্বেষ তা দূর করতে হলে বুদ্ধদেবের অমর বাণী ও আদর্শ বড় প্রয়োজন।’
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও বৌদ্ধ সংগঠনের নেতৃবৃন্দবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।